শিক্ষার্থীদের আর্থিক সুবিধা, যাতায়াত সুবিধা, থাকা-খাওয়ার সুবিধাসহ সার্বিক ভোগান্তি হ্রাসের কথা ভেবে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষে গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে। এদিকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বার বার মেধাতালিকা ও গণসাক্ষাতকার আহ্বান করেও আসন পূরণ না হওয়ার বিষয়টি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন মহলে চলছে নানান আলোচনা-সমালোচনা।
এরই প্রেক্ষিতে বুধবার (২ মার্চ) বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কাউন্সিলে জরুরি এক সভার আয়োজন করা হয়েছিল। সেখানে শিক্ষকরা তাদের মতামত তুলে ধরেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব মান বজায় রাখার জন্য গুচ্ছ ভর্তি পদ্ধতি থেকে বের হওয়ার বিকল্প নেই বলেও মনে করেন তাঁরা। গুচ্ছ পদ্ধতি থেকে বের হয়ে এলে আগের মত নিজস্ব ভর্তি ব্যবস্থাপনায় ফিরবে বিশ্ববিদ্যালয়টি।
তবে একাডেমিক কাউন্সিলের সভায় এ বিষয়ে আলোচনা হলেও গুচ্ছের বিষয়ে সামনের একাডেমিক কাউন্সিলে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. ইমদাদুল হক। তিনি বলেন- গুচ্ছে যাওয়ার ব্যাপারে সভায় অনেক শিক্ষক পক্ষে-বিপক্ষে মতামত দিয়েছেন। সামনের সভায় আমরা পূর্ণাঙ্গ সিদ্ধান্ত নেবো।
এদিকে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষে স্নাতকের ভর্তি কার্যক্রম চলছে তিন মাসেরও বেশি সময় ধরে। এই সময়ে দফায় দফায় মেধা তালিকা প্রকাশ করেও আশানুরূপ শিক্ষার্থী না পাওয়ায় গুচ্ছ পদ্ধতির সফলতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।উল্লেখ্য,গুচ্ছ প্রক্রিয়ায় ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশের পর গত বছরের ১৬ ই নভেম্বর ভর্তি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের মধ্য দিয়ে কার্যক্রম শুরু করে জবি এবং আগামী ০৮ই মার্চ থেকে ১ম বর্ষের ক্লাস শুরু হওয়ার কথা রয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. আবুল কালাম মো. লুৎফর রহমান বলেন,”ভোগান্তি কমানোর জন্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিতে গুচ্ছ পদ্ধতি চালু হলেও সেই ভোগান্তি কিছুটা রয়েই গেছে। সমন্বয়হীনতার কারণেই এই ভোগান্তি মনে হচ্ছে। ভর্তির ক্ষেত্রে সমন্বয় থাকলে ভালো হতো। আমরা আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের কাছে বলেছি বিষয়টি নিয়ে নতুন করে চিন্তা করা যায় কিনা। কারন গুচ্ছ ভর্তি প্রক্রিয়ায় ঢাকার বাহিরের বিশ্ববিদ্যালয়গুলি অধিকাংশ ক্ষেত্রে প্রত্যাশা মাফিক শিক্ষার্থী পেলেও আমরা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় তা পাই নি।
” বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-কল্যাণ পরিচালক অধ্যাপক ড. আইনুল ইসলাম বলেন, “কোভিড পরিস্থিতির কারনে গুচ্ছ ভর্তি প্রক্রিয়ায় কিছুটা অসুবিধা হচ্ছে। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলি কোভিড পরিস্থিতিতে নিয়মিত ভর্তি কার্যক্রম চালু রাখায় অনেক শিক্ষার্থী সে সেব বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে যায়। তাই সরকারী বিশ্ববিদ্যালয়গুলি কিছুটা অসুবিধার মুখোমুখি হচ্ছে।
” গুচ্ছভুক্ত ২০টি বিশ্ববিদ্যালয়ে গত বছরের ১৭ অক্টোবর বিজ্ঞান ইউনিটের, ২৪ অক্টোবর মানবিক ইউনিটের এবং পহেলা নভেম্বর বাণিজ্য ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। পরীক্ষা শেষে ২০ অক্টোবর বিজ্ঞান ইউনিটের , ২৬ অক্টোবর মানবিক ইউনিটের এবং সর্বশেষ ৩ নভেম্বর বাণিজ্য ইউনিটের ফল প্রকাশিত হয়।